আ.লীগ জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত : মঈন খান

0
69

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)। ‘গণতন্ত্রের সংকট উত্তরণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান : বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট’- শীর্ষক সভায় সভাপতিত্ব করেন জেডআরএফের রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী। সংশ্লিষ্ট শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেডআরএফের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা. শামীম।

ড. মঈন খান বলেন, আমাদের আন্দোলন বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। আমাদের আন্দোলন একদলীয় বাকশালী সরকারের বিদায় করে হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার আন্দোলন। ক্ষমতা বা অর্থের মোহে নয়, আমাদের লক্ষ্য জনগণের ভোটাধিকার ও হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।

তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। সেজন্যই ৭ জানুয়ারি দেশের জনগণ ডামি নির্বাচনের ভোট বর্জন করেছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যর্থ এবং জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত। দেশের জনগণ অতীতেও আপস করেনি এবারও ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রশ্নে আপস করবে না।

এ সময় জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, যারা জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার নিয়ে সমালোচনা ও কটূক্তি করে তারা কারা? তারা হলো- গায়ের জোরে নির্বাচন, সব গণমাধ্যম বন্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করা লোক। যাদের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ ৫০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও জিয়ার কাছাকাছি যেতে পারবে না। তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আজীবন সংগ্রাম করছেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়ছিল। আজকে ডলারের দাম কত? গাজীপুরে সকল কারখানা বন্ধ। ডলার নাই, আছে শুধু আওয়ামী লীগের দম্ভ। কারণ তারা এরশাদের চেয়েও স্বৈরাচারী কায়দায় ক্ষমতায় থাকতে চায়। সেজন্যই ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করেছে। কিন্তু সেই নির্বাচনকে দেশবাসীকে নই গণতান্ত্রিক বিশ্ব গ্রহণ করেনি।

প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু বলেন, দেশের গণতন্ত্র মৃত। আজকে দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন হচ্ছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু কেন্দ্রে কোনো ভোটার উপস্থিতি ছিল না। ‘৭৫ সালেও গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আজও নবরূপে বাকশাল কায়েম করেছে আওয়ামী লীগ। এখান থেকে মুক্তির জন্য আমাদের রাজপথেই থাকতে হবে।

প্রবন্ধকার অধ্যাপক আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিখোঁজের ইতিহাস ধীরে ধীরে দীর্ঘায়িত হচ্ছে। স্বাধীনতাত্তোর বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে অপহৃত গণতন্ত্র জিয়াউর রহমানের সময়ে মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল। পরে বেগম খালেদা জিয়ার বিচক্ষণতা জাতিকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনে পুনরায়। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকশনের নামে ভোটারবিহীন সিলেকশন, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতারণামূলক নিশিরাতের ভোটডাকাতি হতবাক করেছিল বিশ্ব বিবেককে।

তিনি বলেন, পরিতাপের বিষয়, সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়া হয়। ‘গণতন্ত্র’ শব্দটিই আজ অভিধানের পাতা থেকে বিদায় নেওয়ার অবস্থা। কিন্তু তারেক রহমানের নেতৃত্বে চলমান এই আন্দোলনে মুক্তিকামী জনগণের হারানোর কিছু নাই।

ড. শামীম বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন প্রতিষ্ঠানিকভাবে মৃত। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে একমাত্র পথ হতে পারে শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক আদর্শ। যে আদর্শের মাধ্যমে তিনি একদলীয় অপশাসন থেকে বাংলাদেশের মানুষকে দেখিয়েছিলেন প্রকৃত মুক্তির পথ। তারেক রহমানের যোগ্য নেতৃত্বের গুণে আবার পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে বাংলাদেশের লুণ্ঠিত ভবিষ্যৎ এবং হারিয়ে ফেলা গণতন্ত্র, ভাত ও ভোটের অধিকার।

জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রকৌশলী কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, জেডআরএফের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মাহবুব আলম, মুক্তিযোদ্ধা দল ঢাকা মহানগরীর সভাপতি প্রকৌশলী হালিম মিয়া প্রমুখ। এসময় জেডআরএফের সদস্যসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here