বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার কোনো দিক দিয়ে সফল হতে পারছে না। দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছেই। আজকে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে হয়- চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য। এটা ভাবতে পারেন! আসলে কোনো কিছুর ওপরই তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীতে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনেও তারা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ডামি প্রার্থী দিয়ে গণ্ডগোল লাগিয়েছে। আসলে পতনকালে এমন ভুল হয়। এই সরকার অনেক ভুল করেছে। এজন্য তাদের খেসারত দিতে হবে। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি এবং জনগণও আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। খুব দ্রুত আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে মুক্ত হবো। যারা কারামুক্ত হয়েছেন তারা রক্তাক্ত বাঘ। তাদের পায়ে তো শিকল পরানো যাবে না। আন্দোলনও বন্ধ হবে না।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। সম্প্রতি নির্বাচনের নামে যে খেলা হলো তা আমরা কেউই চাইনি। দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ এই খেলায় যুক্ত হয়নি। যারা ক্ষমতায় আছে বলে দাবি করে তারা জোর করে ক্ষমতায় আছে। তারা জনগণের সরকার নন। নিজেদের স্বার্থ বিকিয়ে অন্যের সাহায্যে ক্ষমতায় আছে। যেসব দেশের সহায়তায় ক্ষমতায় আছে তাদের প্রত্যেককে অবৈধ সুবিধা দিয়েছে। জনগণ এটা মানবে না। আন্দোলন আরও বেগবান এবং সফল হবে ইনশাআল্লাহ।
সম্প্রতি ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেনের কারামুক্তি উপলক্ষে ‘কারামুক্তি আন্দোলনের শক্তি ও গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও জাগপার সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপসল পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, গণঅধিকার পরিষদের আরেক অংশের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মসিউজ্জামান, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, ১২ দলের নেতাদের মধ্যে ইসলামি ঐক্য জোটের শওকত আমিন, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ চেয়ারম্যান মনসুরুল হাসান রায়পুরী, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ কারামুক্ত নেতারা।
সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছে। জনগণ এটাকে মানেনি। আমাদের সংগ্রাম চলছে এবং চলবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার যা ইচ্ছা তাই করতে পারে না। ৭ জানুয়ারি দেশে কোনো ভোট হয়নি। এমনকি সেদিন দেশবাসী প্রমাণ করেছে, তারা নিরঙ্কুশভাবে এই সরকারকে ঘৃণা করে। আর সরকার বলছে তারা না কি বিএনপিকে নিয়ে নয়, দ্রব্যমূল্য নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু সেটাতেও কিছু করতে পারেনি। কারণ আওয়ামী লীগে চাপার জোর বেশি।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আজকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর জাতিকে বিভক্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। যা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মশিউর রহমান জাদু মিয়ার মতো বরেণ্য ব্যক্তিরা।