যেকোন গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথম ও পূর্বশর্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন ধরণের। তবে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার কিছু আন্তর্জাতিক মানদণ্ড রয়েছে।
কিছু সর্বজনীন নীতি এবং নির্দেশিকার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য মানদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে।
গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারকে সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রটোকল, ঘোষণা, চুক্তি এবং নানা ধরণের আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতির আলোকে নির্বাচনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে।
জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় বলা হয়েছে, সরকারের কর্তৃত্বের ভিত্তি তৈরি হবে জনগণের ইচ্ছার মাধ্যমে। নির্ধারিত সময় পরপর এবং প্রকৃত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হবে।
উনিশশো ছিয়ানব্বই সালের ১২ই জুলাই জাতিসংঘের কমিটি মানবাধিকার, ভোটাধিকার এবং নির্বাচন সংক্রান্ত একটি ঘোষণা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে সেখানে ২৫ টি বিষয় গ্রহণ করা হয়েছে।
‘দ্য রাইট টু পার্টিসিপেট ইন পাবলিক অ্যাফেয়ার্স, ভোটিং রাইটস এন্ড দ্য রাইট টু ইকুয়াল একসেস টু পাবলিক সার্ভিস’ – শিরোনামের ঘোষণায় নির্বাচন ও ভোটাধিকার সংক্রান্ত নানা বিষয় উল্লেখ করা আছে।
দুই হাজার পনের সালে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য কার্টার সেন্টার ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই-কমিশনারের অফিস একটি কনফারেন্সের আয়োজন করে। সেখানে মূল বিষয় ছিল মানবাধিকার এবং নির্বাচনের মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা করা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের প্রতিষ্ঠিত ‘দ্য কার্টার সেন্টার’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুসংহত করার জন্য কাজ করে।
দুই হাজার সতের সালে তাদের প্রকাশিত যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন জরুরী, কারণ এর মাধ্যমে সরকারগুলো বৈধ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাতে মানবাধিকার রক্ষা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনন্সিটিটিউট (এনডিআই) তাদের এক রিপোর্টে বলছে- এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন দেশের সরকার যৌথভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং নির্বাচন সংক্রান্ত নানা ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে। এগুলো সম্মান করতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো বাধ্য।
পৃথিবীর নানা দেশে নির্বাচনের নানা পদ্ধতি রয়েছে। এনডিআই বলছে, কোন নির্বাচনী প্রক্রিয়া শতভাগ সঠিক নয়। সব জায়গায় উন্নত করার সুযোগ রয়েছে।
কিন্তু তারপরেও কিছু সর্বজনীন বিষয় আছে যার মাধ্যমে বোঝা যায় নির্বাচন কতটা বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে:
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা